এডিস মশা দেখতে কেমন: এডিস মশা চেনার উপায়

বাংলাদেশে এখন এমন একটা সময় চলছে, যখন মশার চেয়ে বড় তারকা আর কেউ নেই! ঘরে, বাইরে, অফিসে—সব জায়গায় ওদের “উড়ন্ত উপস্থিতি”। কারও হাতে চা, কারও হাতে ব্যাট—সবাই মশার সঙ্গে যুদ্ধ করে যাচ্ছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এডিস মশা দেখতে কেমন: এডিস মশা চেনার উপায়, আর কেনই বা এর নাম শুনলেই সবাই ঘাবড়ে যায়? চলুন, একটু মজার ঢঙে জেনে নিই!

এডিস মশা দেখতে কেমন/এডিস মশা চেনার উপায়

প্রথমেই জেনে রাখুন—সব মশাই ডেঙ্গুর জন্য দায়ী নয়। দোষ একেবারে এক "ভিআইপি" মশার—এডিস মশা।

এই মশাকে চেনা একদম সহজ। দেখতে যেন “ব্ল্যাক অ্যান্ড হোয়াইট” ফ্যাশন মডেল! শরীর আর পায়ে সাদা-কালো দাগ, যেন স্যুট পরে বেরিয়েছে কোনো পার্টিতে। অন্য মশারা যেখানে রাতের অন্ধকারে কামড়ায়, এডিস সাহেব দিনের আলোতেই আক্রমণ চালান—একেবারে প্রকাশ্য দিবালোকে অপরাধ!

কেন এডিস মশাকে এত ভয়?

কারণ ওর কামড়েই ছড়িয়ে পড়ে ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া, আর কখনো কখনো জিকা ভাইরাসও। নাম শুনলেই কাঁপুনি ধরে, তাই না?

চলতি বছরই (২০২৫) বাংলাদেশে প্রায় ৭৭ হাজার মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, আর ৩০৭ জন প্রাণ হারিয়েছেন। ভাবুন, মশার কামড়ে এত বড় সংখ্যা!

অবশ্য এটা নতুন কিছু নয়। ২০১৯ সালে এই মশার কীর্তি ছিল ভয়াবহ—এক লাখের বেশি মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। কিন্তু রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে ২০২৩ সাল—প্রায় সাড়ে তিন লাখ মানুষ হাসপাতালে ভর্তি, আর প্রায় দুই হাজার মানুষ মারা গেছেন।

ডেঙ্গু মশা কামড়ালে সমস্যা কোথায়?

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক মুশতাক হোসেন স্পষ্টই বলেছেন, “ডেঙ্গুর প্রকোপ কমাতে এডিস মশা নির্মূল ছাড়া উপায় নেই।”

কিন্তু দুঃখের বিষয়, আমরা এখনো সেই কাজটা “ফাইনাল পরীক্ষার আগের দিন পড়া”র মতো করে করছি—শেষ মুহূর্তে তাড়াহুড়ো!

এডিস মশার বিলাসবহুল লাইফস্টাইল

এই মশার আরাম-আয়েশও দেখার মতো! পরিষ্কার পানিতে ডিম দেয়—ফুলের টব, ওয়াশরুমের কোণা, পানির ড্রাম—সবই ওর পাঁচতারকা হোটেল। আর কেউ যদি ভাবে, “আমার বাসা তো ঝকঝকে,” তাহলেই ভুল করছেন। কারণ এডিস মশা পরিষ্কার জায়গাতেই VIP টিকিট কেটে থাকে।

শেষ কথা

এডিস মশা দেখতে ছোট হলেও কাজের দিক দিয়ে ভয়ংকর বড়। ওর ফ্যাশন সেন্স যেমন দারুণ, তেমনি কামড়ের প্রভাব মারাত্মক।

তাই এখন সময় এসেছে ওর সাথে “ফাইনাল ব্রেকআপ” করার!

পানির পাত্র ঢেকে রাখুন, ফুলের টবের পানি বদলান, আর দিনের বেলা একটু সতর্ক থাকুন—কারণ, কে জানে, পরের “মশা মিটিং” হয়তো আপনার ঘরেই বসতে চলেছে!